Monday 20 July 2015

নুসরাতের গল্প



আজ আমার আর নুসরাতের বিবাহ বার্ষিকী। এটা আমাদের প্রথম বিবাহ বার্ষিকী। এ পর্যন্ত নুসরাতকে নিয়ে যা লিখেছি। সবই ছিলো ২০১৪ সালের প্রেক্ষাপট। ২০১৪ সালের ঠিক ঈদের দুই দিন পর আমাদের বিয়ে হয়। আমাদের পরিবারের সম্মতিতেই আমাদের বিয়েটা হয়। আমার আর নুসরাতের রিলেশনের ব্যাপারে ওর মা আর আমার মা জানতো। ঈদে বাসায় যাওয়ার পর নুসরাতের বাবা জেনে যায়। এবং আমার সাথে কথা বলতে চায়। আমার সাথে কথা বলে নুসরাতের সাথে আমার বিয়ের কথা বলে ওর বাবা। কারণ এখন কার সময় ভালো না। আর আমাদের এ বয়সটা খুব খারাপ যে কোন সময়ে যে কোন দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে তার জন্য। আমার বাসা থেকেও কোন আপত্তি ছিলো না। আমাদের বিয়ে হওয়া এক বছর হয়ে গেল। আমি এখন ই.বি. তে সি.এস.ই. তে ফাইনাল ইয়ারে। আর নুসরাত ২য় বর্ষে কুষ্টিয়া মেডিকেলে। এখন আমি সিরাজগঞ্জ। মানে নুসরাতের বাবার বাসায়। ঈদে শ্বশুর বাড়িতে ভালোই লাগে। নুসরাতে বাবা মার একমাত্র মেয়ে। ওর একটা ছোট ভাই আছে এবার এইটে পড়ে। আমার শালা বাবুটা বিশাল দুষ্টু। এতক্ষণ আমাকে জ্বালাতন করছিলো। অবশ্য জ্বালাতন নয় একমাত্র দুলাভাইয়ের সাথে একটু ইয়ার্কি ফাজলামি না করলে কেমন হয়?? আমিও বিষয়টা ইনজয় করছিলাম। তবে আমার শালা বাবুকে থামাতে হলে আমার ল্যাপটপ অথবা ফোনে গেম খেলতে দিলেই সন্তুষ্ট। একটু আগে ল্যাপটপ হাতে দিয়ে বিদায় করলাম । এখন আমি নুসরাতের কোলের উপর মাথা দিয়ে শুয়ে শুয়ে লিখছি। আর ও আমার চুলগুলো নেড়ে দিচ্ছে। খুবই ভালে লাগছে। যে কোন সময় ঘুমিয়ে পড়বো। আমাদের জন্য দোয়া করবেন সবাই। যেন এভাবেই চলতে পারি সারা জীবন।


Thursday 16 July 2015

নুসরাতের গল্প।

 এতদিন জানতাম ছেলেদের মাথার তার দু একটা ছেড়া থাকে। এখন থেকে তার সব কিছুই উল্টা করে দিচ্ছে মেয়েটি।মনে হয় মাথায় গন্ডগোল আছে। কিন্তু MBBS তো আর পাগলিরা পড়ে না। মানে আমি নুসরাতের কথা বলছি।কুষ্টিয়া মেডিকেলে 1st year  এ পড়ছে। নুসরাতের সাথে মাঝে মাঝে আমার ঝগড়া হয়। ভিষণ ঝগড়া হয়। আমাকে প্রথমত বকা দেয়্ এতো সময় ধরে ফেসবুকে থাকার জন্ন।
আমাকে বলে এত বেশি ফেসবুক চালালে সে আমার সাথে ব্রেক আপ করে দেবে। রিলেশনের এক বছর থেকে শুনছি এই একই কথা। মাঝে মাঝে আমি ওকে ক্ষেপিয়ে তোলার জন্য বলি-”আমার সাথে রিলেশন করলে কেন? আমি একজন কৃষকের ছেলে। আর আমি স্মার্টও না?”...আরও অনেক.........।
ও এখন এসব কথাতে আর রেগে যায় না। প্রথম প্রথম রেগে যেত । এখন ঐ কথাগুলো বল্লে বলে আমি নাকি দিন দিন পাগল হয়ে যাচ্ছি। আমাকে পাবনাতে পাঠিয়ে দেবে। তখন আমিও বলি যে ঘরের ভেতর ডাক্তার থাকতে পাবনায় যেতে হবে কেন?তখন সে দুষ্টু ছেলেদের মত জিহ্বার অগ্রভাগ বের করে দুষ্টামির একটা হাসি দেয় যেটা আমার কাছে পৃথিবীর সকল সুখের উৎস্য মনে হয়? মেয়েটা আসলেইৈএকটা পাগল না.... না.... পাগলি।
এই স্ট্যাটাস দেখাির পর যে কি করবে আল্লাহ ই ভালো জানেন।

Monday 13 July 2015

নুসরাতের গল্প

গতকাল নুসরাত এর সাথে অনেকক্ষণ ছিলাম। ওরা আজ বাসায় চলে যাবে। তাই গতকাল বিদায় জানানোর জন্যই দেখা করতে যাওয়া।ওর বাবা ইঞ্জিনিয়ার। কুষ্টিয়াতে থাকেন। বি.আর.বি. তে জব করেন নুসরাতের বাবা। ওদের বাসা সিরাজগঞ্জ। ঈদের পরে আসবে। অনেকদিন দেখা হবে না ওর সাথে।তাই বিকেলে দেখা করার কথা বললো। তাই গেছিলাম দেখা করার জন্য।
সরকারী কলেজের সামনে ও আমার জন্য অপেক্ষা করছিলো। দেখা করতে গিয়ে কখনো আমি ওর থেকে আগে যেতে পারিনাই। বরাবরের মতো অজও একই অবস্থা।
তবে মেয়েটার ভেতর কোন রকম প্রতিক্রিয়া দেখিনাই কখনো দেরি করে দেখা করতে যাওয়ার জন্য। আবার দেরি করার জন্য সরি বললে রাগ করে।
গিয়ে পুকুর পাড়ে বসলাম অনেকক্ষণ। কি জানি মেয়েটার মাথায় কোন গন্ডগোল আছে দেখা করতে আসলে আর বাসায় ফিরে যেতেই চায় না।
যাই হোক আজ ওর সাথে প্রথমদিন দেখা করার কথা বলি আজ। আমি ক্যাম্পাস থেকে ফিরছিলাম। হাসপাতাল মোড় পার হয়েছি। দেখি পেছন থেকে একটি মেয়ে ডাকছে।
-ভাইয়া.........একটু শুনুন..........।
আমাকে কোন মেয়ে ডাকবে কেন??? হয়তো বা অন্য কাওকে ডাকছে।আমি তাতে কান না দিয়ে চললাম। তারপর দেখি আমার নাম ধরে ডাকছে।
-নরিব ভাইয়া..............।
আমি পিছু তাকালাম...
-আমাকে বলছেন??
-জ্বী......কখন থেকে আপনার পিছু নিয়েছি বলুন তো...??
আমি আসলেই হতবাক। এতদিন জানতাম ছেলেরা মেয়েদের পেছনে ঘোরাঘুরি করে । আর আজ এ কি শুনলাম রে বাবা???
-আমি আবার কি করলাম বলুন তো?
-অনেক কিছু......করেছেন। বলেই একটা দুষ্টামির হাসি দিল....।আপনি কি  বিজি??
- না...... কেন বলুন তো?
-একটু কোথও গিয়ে বসি চলুন।
আমি একটা শক খেয়ে গেলাম। সঙ্গে গিয়ে কেস খেয়ে যাবো নাকি আবার??
-কোথায়??
-চলুন কোথাও গিয়ে বসি??
-কোথায়??
-এই যে শিশু পার্ক।
-আমাকে দেখে কি শিশু মনে হয়?
-কেন?
-না..........মানে শিশু পার্কের কথা শুনলে কেমন কেমন মনে হয় তো তাই।
তারপর ওকে বল্লাম একটু দাড়ান একটা ফোন করে নেই। এদিকে আড়ালে এসে রনি ভাইকে ফোন দিয়ে বল্লাম
-ভাই.....
-হ্যা নিরব বলো............।
-কোথায় আপনি?
-কেন কোন সমস্যা???
-না .......। মানে ......একটু পার্কে ঢুকবো কোন সমস্যা হবে??
-না কোন সমস্যা নাই। ঢুকে পড়ো।
-একটা মেয়ে আছে সাথে??
-নো প্রব্লেম।গার্ল ফ্রেন্ড??
-না ভাই কি যে বলেন?? আমার সব কথাই তো আপনি জানেন।
-ওকে নো প্রব্লেম। যাও কোন সমস্যা নেই। আর পার্কের ম্যানেজার তো তোমাকে চেনে। আর আমি ফোন করে দিচ্ছি। ও সব ঠিক করে দেবে।আর কোন সমস্যা হলে আমাকে ফোন দিও।
-ওকে।
[রনি ভাই হলো এই এলাকার বড় ভাই। তার সাথে অনেক ভালো একটা সম্পর্ক আমার। উনি আমাদের মেস মালিকের ছেলে রাসেল ভাই এর বন্ধু। রাসেল ভাইয়ের মাধ্যমেই আমার পরিচয় তার সাথে।সে আবার অনেক কথা। সেটা আরেকদিন বলবো।]
এবার নুসরােেতর কাছে আসলাম।
-চলুন....।যাওয়া যাক।
-চলুন।.....[কিছুক্ষণ নিরবে হাটলাম। পোস্ট অফিসের সামনে এস ] আচ্ছা আপনি এত ভিতু কেন??
-মানে??
-ফ্রেন্ডদের ফোন করে আসতে বল্লেন ?? যাতে আপনার কোন সমস্যা না হয়??আর ভয় নেই আমি কিডন্যাপার না। যে আপনাকে কিডন্যাপ করবো।এতটুকু বিশ্বাস করতে পারেন।
-আরে না.....। ঐ রকম কোন ব্যাপার না।
-তাহলে কি রকম??
বুঝলাম যে ধরা খেয়ে গেছি। তবে এটা বুঝলাম  মেয়েরা ছেলেদের মন বোঝার একটা অসাধারণ ক্ষমতা রাখে। চুপচাপ।পার্কের ভিতেরে গিয়ে বসলাম।চারে দিকে কপত-কপতি। অনেকটা অস্বস্তি লাগছে। এমন সিচুয়েশনে পড়ি নাই কখনো। নিরিবিলি একটি জায়গায় আমরা বসলাম। এতক্ষণ ওর সাথে পরিচিত মানুষের মতোই কথা হচ্ছিলো।এবার আমি বল্লাম
-আচ্ছা আপিিন কে??
-আমি নুসরাত.....
-আমার পিছু লেগেছেন কেন??
-কেন?? ছেলেদের কি পিছু নেয়া নিষেধ?
-না...........তবে.....
-তবে কি?
-আপনার ভয় লাগছে না??
-না ........তো। ভয় লাগবে কেন??
-আমাকে আপনি চেনেন না। জানেন না। আর আমার সাথে এরকম একটা নির্জন জায়গায়.............??
-আমি এটা বিশ্বাস করি যে একমাত্র পাগল আর কবি দের দ্বারা কোন ক্ষতি হওয়ার আসঙ্কা নেই।
-তারমানে ....আমাকে পাগল বলছেন??
-না..তো.।
-এই যে এখুনি বল্লেন............।আমি উঠি।
-এই দাড়ান দাড়ান।
-জ্বি ....দ্রুত কি বলতে চান বলুন আর.....আমাকে যেতে হবে।আসলে কে আপনি?? যদি কোন ডিটেকটিভ হয়ে থাকেন তবে কেউ যদি আমার নামে কোন তথ্য দিয়ে থাকে তবে তা ভূল।আমি সাধারণ মানুষ।
-আমি বিশ্বাস করি না??
-তবে কি আমাকে আসমি মনে হচ্ছে আপনার??
-আসলে আমি আপনার ফেসবুকের এক বন্ধু। আমাকে হয়তো চিনবেন না।আপনার সব স্ট্যাটাসগুলো আমি পড়ি। আমার খুব ভালো লাগে।আপনার লিখা গল্প,কবিতা আমার খুব ভালো লাগে।
-ধন্যবাদ।
-আপনার ব্লগে প্রতিদিন আমি ঢুকি। িি.িঢ়ড়বস৪ঢ়ৎবস.নষড়মংঢ়ড়ঃ.পড়স।আপনার ব্লগ তো??। খুব দারুন লাগে আমার আপনার লিখা গুলো।
-আমাকে গ্যাস মারছেন?আর হ্যা এটাই আমার ব্লগ।
-ছি ছি. কি যে বলেন না?? সত্যি বলছি।আর একটা কথা বলবো??
-কি বলুন??
-আপনার ফোন নাম্বারটা আমাকে দেবেন??
[আরো একবার ক্র্যাশ খাইলাম এই প্রথম কোন মেয়ে আমার ফোন নাম্বার চাইলো।]
-আচ্ছ নিন........। তাই বলে আমার নম্বারটা ওকে দিলাম।
তারপর অনেকক্ষণ তার সাথে ছিলাম। তবে সে থাকে কোথায় বা কি করে তার কিছুই জিজ্ঞেস করা হয়নাই।পরে মনে পড়লো আমার এই কমন সেন্সটার কথা।আজ এ পর্যন্তই আগামীদিন বাকি অংশ দেয়ার চেষ্টা করবো।

নুসরাতের গল্প

রোজা শুরু হওয়ার পর থেকে নুসরাতের সাথে দেখা সাক্ষাৎ হচ্ছে না। ওর সাথে কয়েক দিন আগে পরিচয়। আস্তে আস্তে সেই পরিচয়টা আরো ঘন হতে লাগলো।
তার সাথে একটা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লাম।
আমার আর শাপলার কথাটা জেনে শুনেই সে আমার সাথে সম্পর্কটা করেছে।আমিই নুসরাতকে সব বলেছি।শাপলরার জন্য আমি আনেক চোখের জল ফেলেছি কিন্তু ঘৃণা ছাড়া কিছুই জোটেনি।
নুসরাত আমার এক ছাত্রের বোন। সে গল্প আরেকদিন বলবো।
আজ নুসরাতের সাথে দেখা করলাম। আনেক দিন দেখি না ওকে।
হঠাৎ করে আজ ও আমাকে শাপলার কথা জিজ্ঞেস করছিলো ।
কিন্তু কেন………?
বুঝলাম না…………।
June 21 at 10:33am ·
আজকে সকালে ঘুম ভাংলো Fortunately বাবার ফোনে..........
আর সবাইকে বাবা দিবসের সুভেচ্ছা...................................
=======================================
যা চেয়েছি তাই দিয়েছো
আলাদিনের প্রদীপ তুমি আমার
প্রতিদানের কথা ভুলেছো
যা দিয়েছো আমায় তুমি তার

বাবা, তুলনা হয় না তোমার
তুমি যে সবার সেরা
আমায় নিয়ে স্বপ্ন হাজার
তোমার দু চোখ ভরা।
হয়তো আর ফেরা হবে না। হারিয়ে যাবো বাস্তবতার অতল গভীরে। নিস্তব্ধতার আধারে বিলীন হয়ে যাবো প্রেম নামের মরিচিকার পেছনে ছুটতে ছুটেতে। আমার আনাগোনা যে সবই ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি তা প্রতিটি ক্ষণ আমাকে মনে করিয়ে দেয় অ্যালার্ম এর মত। তাই সেই প্রথম কথাটির মতোই আজও বলতে ইচ্ছে হলো ক্ষমা করে দিও আমায়।
অনেক দিন পর আবার একটা গল্প লিখলাম। অনেকেই ইনবক্সে পাঠাচ্ছেন কেন আর লেখালেখি করছি না? তাদেরকে বলছি আসলে একটু ব্যাস্ত আছি তো তাই।

-----------------------------------------------------------------------------------------
রাত্রি ১১টা।
সেই সন্ধ্যা থেকে বসে আছি একটি মাত্র প্রোগ্রাম নিয়ে। ডেসিমেল সংখ্যা থেকে বাইনারী সংখ্যা কনভার্ট করার একটি প্রোগ্রাম তৈরী করতে হবে। কিন্তু লজিক টা কিছুতেই মাথায় ঢুকছে না। মাথাটা একেবারেই অকেজো হয়ে আছে। রাত্রি ৮টার দিক থেকে ট্রাই করছি। এরর আর এরর । আমি ক্লান্ত। আমার মস্তিষ্ক ক্লান্ত।
ক্লান্ত হবেই বা না কেন? আমার মস্তিষ্কটা তো আর মেশিন নয়।
সেই সকাল ৭টায় ঘুম থেকে উঠেছি।৮টায় কোচিং এ ক্লাস নিতে হবে। কাল ফারুক স্যার ফোন দিয়েছিলেন। এদের কোচিং এর নিয়মটা ভালোই। যে দিন যে দিন ক্লাস থাকে তার আগের দিন ফোন দিয়ে বলে দেয়। না হলে আমার মতো যত বিজি শিক্ষক থাকতো তারা কেউ ঠিকঠাক ক্লাস নিতে পারতো না।
ওহ্ অমি তো আমার পরিচয় ই দেই নাই। আমি কম্পিউটার সায়েন্স এ পড়ি। অবশ্য প্রোগ্রামিং এ কথা শুনে বুঝে ফেলেছেন ।আমার মনে হয় এর বেশি আর পরিচয় দেয়ার দরকার হবে না।
সকালে ক্লাস নিয়েছি। আজকের পড়ানোর বিষয় ছিলো নেটওয়ার্ক টপোলজি। ৪০মিনিট শুধু লেকচার দিয়েছি। এর ভেতর আবার ছেলে মেয়েদের বদমায়েশি। আর জিলা স্কুলের ছেলেরা আর গার্লস স্কুলের মেয়েরা যে এত দুষ্টু হয় জানা ছিলো না।ক্লাস শেষ করে আবার ক্যাম্পাসে যেতে হবে। না হলে প্রোগ্রামিং এর প্রফেসরের কাছে ঝাড়ি শুনতে হবে। আর বোরিং লাগে তার ক্লাস করতে । পৃথিবীতে ঐ প্রফেসরের ক্লাস করার মতো বিরক্তিকর জিনিস আর নাই। একটা সমস্যা দিয়েছেন আমাদের অ্যাসাইনমেন্ট্। ডেসিমেল সংখ্যা থেকে বাইনারী সংখ্যা কনভার্ট করার একটি প্রোগ্রাম তৈরী করতে হবে। ক্লাস শেষ করে আরও অন্যান্য ক্লাস গুলো করলাম। তারপর রুমে আসলাম ২টার দিকে।তারপর আবার দুপুরের খাবার খেয়ে ওয়েব ডিজাইনের ক্লাসে ছুটলাম । গত দিনের কাজ ঠিকঠাক প্যাক্টিস করিনাই দেখে মাহফুজ ভাইয়াও ঝাড়ি দিলেন। মাহফুজ ভাইয়া হলেন আমাদের ওয়েব ডিজাইনের শিক্ষক।
কিছুই করার নেই। ইদানিং বড়ই ব্যাস্ত হয়ে পড়েছি।সব সময় শরীরে ক্লান্তি লেগেই থাকে। ৪.৩০ এ ওয়েব ডিজাইনের ক্লাস শেষ করে ছুটলাম কোচিংয়ের দিকে ৫.০০টায় আবার ক্লাস আছে।
কোচিংয়ের ছেলেমেয়ে গুলো সবাই শহুরে।আমাদের কিছু মনেই করে না। বিশেষ করে যে শিক্ষক গুলোর বাসা গ্রামে।তাই কথা একটু বেশিই বলা লাগে।আবারও ৪০ মিনিট শুধু বক বক করেছি। মাথা এখন একেবারেই শেষ। কোচিং থেকে বের হলাম ৬:১৬ মিনিটে। রুমে পেীছলাম। মাথার ভেতর ঝিম ঝিম করা শুরু হয়ে গেছে। গোসল দিলাম।
এখন আর মন চাইছে না যে দু মিনিট আর বসে থাকি। ঘুম ঘুম ঘুম। কিন্তু ঘুমালে চলবে না। প্রোগ্রামটি তৈরী করতেই হবে। বসে পড়লাম। একটু আগে উঠলাম মাথায় আর কোন কাজ করছে না। মনের ভেতর বলছে আজ যদি ঐব্যটারে পাইতাম…….। যে প্রোগ্রামিং সি তৈরী করেছেন। ঐ ব্যাটাকে শিখিয়ে দিতাম প্রোগ্রামিংয়ের ভাষা কি জিনিস। কিন্তু মারা গিয়ে বেঁচে গেছেন । আমরা পড়েছি মহা বিপদে।
আমার রুমমেট মিজান ভাই। উনি একটু ধুমপায়ী। একটা ব্যাংকে জব করেন।বয়স ২৮ এর বেশি। এখনো বিয়েই করেন নি।উনাকে বল্লাম
-মিজান ভাই চলেন বাইরে যায়…………..চা খেয়ে আসি।আর আপনার টাও হয়ে যাবে।
-চলো যাই। কি ব্যাপার এমন লাগছে কেনো তোমাকে?
-আর বইলেন না। কি এক প্রোগ্রাম দিয়েছে । মেলাতেই পারছি না।
আমি আর মিজান ভাই বাইরে গেলাম। আমি চা খেলাম আর মিজান ভাই ঐ টা খেলো মানে সিগারেট।
তারপর রুমের দিকে হাটছি। অনেক দিন পায়রার সাথে কথা বলা হয় নাই। আজ একটু ফোন দেই । যেই ভাবা সেই কাজ।প্রায় ৩০ দিন পর আজ পায়রার সাথে কথা বলছি। অনেক্ষণ কথা হলো আজ। প্রায় ৪৫ মিনিট। শেষে যখন ও জিঞ্জেস করলো কি খেয়েছি আজ? তখনই মনে পড়লো যে আজ রাত্রে এখনো আমি খাইনাই।
আর পায়রা যখন ফোন রাখতে চাইলো তখন মনে হলো এইতো ৫মিনিট কথা হলো এখনই রাখবে?? জোর করলাম না।ফোনটা রেখে দিলাম। রেখে দিয়ে দেখি ৪৫ মিনিট কথা হয়ে গেছে।
রুমে গিয়ে ভাত খেলাম। তারপর ডেনিস রিচির গুষ্টি উদ্ধার করতে করতে ঘুমমিয়ে পড়লাম। ডেনিস রিচি হলেন সি প্রোগ্রামিংয়ের জনক। ২০১১ সালে মারা গেছেন।
মোটামুটি মাঝ রাতের দিকে সিগারেটের ধোয়তে ঘুম ভাংলো।ভাবলমাম মিজান ভাই কি রুমের ভেতরেই………..। কিন্তু উনি তো কখনোই এমন কাজ করবেন না। বারান্দায় গিয়েও যদি উনি সিগারেট খান তবুও আমাকে জিঞ্জেস করে খান।আর মিজান ভাইয়ের মুখে দাঁড়িও নাই।ঘরের লাইট বন্ধ।আমার ল্যাপটপ অন করা। সেটর মৃদু আলোতে তার মুখ দেখা যাচ্ছে। লাল টকটকে চেহারা। হাসি হাসি মুখ। কোকড়ানো কোকড়ানো সাদা সাদা দাড়িতে মুখ ভর্তি। উনাকে দেখে হাল্কা হাল্কা বুঝলাম উনি হয়তো বা প্রোগ্রামিং সি এর জনক ডেনিস রিচি ।উনার ছবি ইন্টারনেটে দেখেছি। হাতে দামি ব্যান্ডের সিগারেট। পাশেই প্যাকেট পড়ে আছে । যা দেখে বুঝলাম। আমার দিকে হাসি হাসি মুখ করে তাকিয়ে আছেন।আমার নাম ধরে ডাকলেন
-তোমার সমস্যা আমি সমাধান করে দিয়েছি।
-আপনি কে ?? আর আপনি রুমে ঢুকলেন কিভাবে?? রুমে তো ভেতর থেকে লক করা ছিলো। আর রুমের ভেতর স্মোকিং করছেন কেন?
-আমি ডেনিস রিচি। প্রোগ্রামিং এর জনক।
-আমার সাথে ইয়ার্কি মারছেন? আর স্যার রিচি তো ২০১১ সালেই মারা গেছেন। মতলব কি বলেন?আর আপনি কে? ঘরে ঢুকলেন কিভাবে বলুন না হলে লোক জন ডাকবো। আমাদের এখানে কিন্ত এক ভাই থাকেন যিনি রাজনৈতিক নেতা।
-আমি জানি। আর আমি এটাও জানি আমি মারা গেছি। তুমি যে প্রোগ্রামটির সমাধান করতে পারো নাই । এবং যার জন্য আমাকে অনেক বকাবকি করেছো তাই সমাধান করার জন্য এসছি।
-একদম মিথ্যা বলবেন না। স্যার রিচি কি কখনো বাংলা জানতেন?? আমাকে বোকা পাইছেন??
-মরার পরে আমরা সব ভাষা বলতে পারি সব ভাষা বুঝতে পারি।
আমি উনার সাথে কথা বলতে বলতে গিয়ে রুমের লাইট জ্বালালাম। লাইট জ্বালিয়েই পেছন ফিরে দেখি স্যার ডেনিস রিচি নেই। উধাও। আমার পিসি ও বন্ধ। আমার স্পস্ট মনে আছে আমি ঘুমানোর সময় আমার পিসি বন্ধ করে ঘুমিয়েছিলাম। আর আমার পিসি তে পাসওয়ার্ড দেয়া থাকতো যেটা কেউ জানতো না। মাঝে মাঝে আমিও ভুলে যেতাম। তাই ডায়েরিতে লিখে রাখতাম। আর আমি আমার ল্যাপটপ বন্ধ রাখলে LED অর্থাৎ শাটার নামিয়ে রাখতাম। কিন্তু LED এর আলোতে আমি স্যার রিচি কে স্পস্ট দেখেছি। ঐ দিকে মিজান ভাই নাক ডেকে দিব্যি ঘুমোচ্ছেন। আস্তে কোনো শব্দ হলে বা কথা বললে যিনি জেগে উঠেন। তার পাশে এত কিছু ঘটে চলেছে তিনি কিছুই টের পাচ্ছেন না। তখন বুঝলাম হ্যালোসিনেশন এর জন্যই এমনটা হয়েছে। আর হয় তো বা যদি আমি বিজ্ঞানের ছাত্র না হতাম তবে কিন্ত অন্য রকম ব্যাপার হয়ে যেত।হয় তো বা তাকে বকাবকি করেছি যেটা মস্তিষ্ক ধরে রেখেছে । এসমস্ত কারনেই হয়তো হবে।
লাইট অফ করে ঘুমিয়ে পড়লাম। মিজান ভাই কে আর ডাকলাম না।
সকাল ৬টায় ঘুম থেকে উঠলাম। কারণ ঐ সমস্যাটার সমাধান আমাকে করতেই হবে। না হলে প্রফেসর ক্লাসটা করতে দেবেন না । হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে পিসি অন করলাম। আমার ল্যাপটপের স্ক্রিনে অর্থাৎ মনিটরের উপর কিছু থাকে না। মানে কোন ফাইল বা ফোল্ডার তাকে না। ডেস্কটপে শুধু My Computer; Recycle Bin; Run; Codeblock এই কয়েকটা আইকন ছাড়া আর কোন আইকন থাকে না। আজ দেখি একটা ফোল্ডার ডেস্কটপের উপর D2B(Decimal 2 Binary) Converter । ওপেন করে দেখি আমার ঐ প্রোগ্রামটা এখানে সঠিক লজিক । সঠিক সমাধান করা।
‪#‎include‬<stdio.h>
#include<conio.h>
void main()
{
int n,a[100],i=0,j;
printf("Enter the number to convert into Binary:");
scanf("%d",&n);
while(n!=0)
{
a[i]=n%2;
n=n/2;
i++;
};
for(j=i-1;j>=0;j--)
printf("%d",a[j]);
}
তাহলে কি কাল রাত্রে স্যার রিচি সত্যিই এসেছিলেন?? মাথায় ঢুকছে না। কি হয়েছিলো কাল রাত্রে।
পরে মিজান ভাইকে সব বল্লাম । উনি বল্লেন উনি কিছুই জানেন না।
আমার কাছেও এর কোন ব্যাখ্যা নাই।
গল্পটা কেমন লাগলো বলবেন। আর একটু খেয়াল করবেন এখানে যে কেন্দ্রীয় চরিত্র যিনি সব কিছু বলছে তার নাম কিন্তু বলি নাই । নাম সিলেক্ট করতে পারি নাই নাম তাই দেই নাই। অনেক গল্পই তো পড়েছেন কেন্দ্রীয় চরিত্রের নাম দিয়ে । আমার টা না হয় নাই থাক। একটু আলাদাই থাক। আর হ্যাঁ কেমন লাগলো জানাবেন।

অনেকদিন পরে আবার একটি গল্প লিখলাম।এবার একটু হরর টাইপের‌।কেমন হয়েছে বলবেন।

 

--------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি রাহুল।
আমি পড়াশোনা করি কুষ্টিয়া সরকারী কলেজে।
গত সেশনে আই.সি.টি. তে ভর্তি হয়েছি।
আমার বাসা ভেড়ামারা। সঙ্গত কারনেই আমাকে মেসে থাকতে হয়। আমার মেস কুষ্টিয়া পৌরগোরস্থানের কাছে। আমার রুমমেট ছিলো দুই জন। মানে রুমে তিনজন থাকতাম। আমি ছাড়া বাকি দুজন হলো মাহফুজ আর হাসান। মাহফুজ এইচ.এস.সি. পরীক্ষার্থী। সে বেশিরভাগ সময়ই বাসায় থাকে। আর তার সাথে আমার আর হাসানের তেমন পড়ি-পড়তা হতো না। আর হাসান পড়তো ডিপ্লোমাতে।
হাসান আর আমার ভেতর খুব ভালো সম্পর্ক ছিলো। যদিও হাসানের কলেজ আমাদের মেস থেকে দুরে ছিলো । তবুও সে আমাদের সাথে থাকতো। এর প্রধান কারণ ছিলো আমাদের মেসের পরিচালক সবুজ ভাই ছিলেন হাসানের দূর সম্পর্কের চাচা।
যাই হোক................
হাসান একটি মেয়েকে ভালোবাসতো । তার নাম ছিলো হিমু। হিমুও হাসানকে অনেক ভালোবাসতো। আর হিমু পড়তো মেডিকেলে। অনেকবার হাসানের সাথে দেখাও করতে গেছি হিমুর সাথে। খুব ভালো মেয়ে হিমু। একদিন হিমু আমাকে ফোন দিয়ে কাঁদতে লাগলো। যে তার বাসা থেকে তার জন্য ছেলে দেখা হয়েছে আর তার সাথেই তার বিয়ে হবে। তো হাসানকে অনেক বুঝিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিলাম। হাসান খুব চিন্তিত ছিলো হিমুর বিয়ে ঠিক হওয়ার জন্য। হাসান একটি কোচিং এ ক্লাস নিতো। তাতে বাসায় বিয়ের কথাটা বলা খুবই কঠিন ছিলো। তবুও ওকে বল্লাম -“ আংকেলকে বুঝিয়ে হিমুদের বাসাতে পাঠাতে।”
ওর আর আমার একটা বদ অভ্যাস ছিলো রাত্রে বাইরে ঘুরে বেড়ানো। রাত্রি ১০টা বা সাড়ে ১০টা বাজলেই বেরিয়ে পড়তাম আমি আর হাসান। এজন্য হাসান আর আমাকে সবুজ ভাইয়ের কাছে আর হিমুর কাছে অনেক বকাও শুনতে হয়েছে।ঘুমন্ত শহরটাকে বড়ই ভালো লাগতো আমাদের।
তো হিমুর বিয়ের কথা শুনে হাসান বাসায় চলে যায়। বাসায় গিয়ে কি হতো সবই সে আমাকে বলতো । আর মেসের অন্যদের থেকে আমার আর হাসানের সম্পর্কটা ভালো ছিলো।
তখন গরমের সময় ছিলো। হাসান বাসায় যাওয়ার তিন চার দিন পর। আমার কাছে ফোন দিলো।আমি ফোন রিসিভ করে-
-হ্যালো।
-হ্যা.....।রাহুল।
-হ্যা... বলো হাসান। কি অবস্থা ??
-ওর বিয়ে হয়ে গেছে।
[বলেই কেদে ফেল্ল হাসান। হাসানকে অনেক কিছু বলে শ্বান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করলাম। ওর বাসা থেকে হিমুর বাসায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো কিন্তু তারা তাদেরকে ফিরিয়ে দিয়েছে।]
-রাত্রে মিল দিও আমার.......... রাহুল।
-ওকে।
তার পর ফোন রেখে দিলাম। আমাদের মেসে ও সবথেকে হাসি খুশি আর চঞ্চল ছেলে ছিলো হাসান। সবাই তাকে খুবই ভালোবাসতো। ওর কষ্টে মেসের সবারই মন খারাপ।
ওদের বাসা থেকে আমাদের মেসে আসতে দুই ঘন্টা সময় লাগতো। কিন্তু এক ঘন্টা পরেই সেই হাসি খুশি মুখ নিয়ে ব্যাগ ঘাড়ে করে। ল্যাপটপ হাতে নিয়ে মেসে আসলে হাসান। কেউ দেখে বুঝবেই না ওর ভালোবাসার মানুষটির বিয়ে হয়ে গেছে অন্য কোথাও। আমি ভাবতেই পারলাম না ও এত দ্রুত কি করে আসলো।তারপর তাকে জিজ্ঞেস করেই ফেল্লাম-
-এত দ্রুত এলে যে???
-কেনো?? অ্যানি প্রোব্লেম??
-না.....। এত দ্রুত কি আসা সম্ভব বাসা থেকে ???
-সব কিছু দ্রুতই হয় রে পাগলা।
-আচ্চা আচ্চা তোমার এই দার্শনিকের মত কথা আমি বুঝবো না। তারপর.......
-হিমুর বিয়ে হয়ে গেছে.........।
-হুম জানি তো.........।
-কার সাথে হয়েছে জানো ???
আগ্রহ করে আর জানতে চাইলাম না। ও মনে কষ্ট পাবে বলে। তারপর ও নিজে থেকেই বল্লো-
-হিমুকে আমিই বিয়ে করেছি।আর ফোনে মিথ্যা বলেছি।
-রিয়েলি....................???
-ইয়াহ.....মাই ডিয়ার... ইয়াহ..........।
এবার ওর কথা শুনে আমাদের মাঝে যেন প্রাণ ফিরে এলো। সবাই প্রানোবন্ত হয়ে উঠলো। সবাই হাসানের কাছ থেকে মিষ্টি খেতে চাইলো। তো আমি আর হাসান মিষ্টি আনতে গেলাম কুষ্টিয়ার বড় বাজারের। বিখ্যাত অশোক মিষ্টান্ন ভান্ডার থেকে।
তবে বলে রাখি হাসান খুব ইয়ার্কি আর ফাজলামো করতো। তাই ভেবে আমরা বিকেলের তার ঐ ফোনের কথা আমলে নিলাম না।
সন্ধ্যা হয়ে গেছে। আমার ভালোই লাগছিলো যে ওরা দুজন এক হতে পেরেছে। কি পবিত্র প্রেমই না ছিল ওদের ভেতর।
বিকেল থেকে সন্ধ্যা পার হয়ে যাচ্ছে সবুজ ভাই মেসে নেই। হাসান অন্য দিন ওর কাকাকে না দেখলে তার খোঁজ খবর নিতো। যে তার কাকা কোথায়??? ফোন করতো । কিন্তু আজ তার কিছুই করছে না।
তো মিষ্টি নিয়ে আমি আর হাসান মেসে আসলাম সন্ধ্যার পর। সবাইকে মিষ্টি দিলাম। আমিও খেলাম। হাসান খেলো। তবে অন্য দিনের থেকে আজকের মিষ্টির স্বাদ আলাদা ছিলো। খুব খুব খুব খুব স্বাদ ছিলো মিষ্টি গুলো। আর আরেকটি জিনিস লক্ষ করলাম । হাসানকে আমার কাছে অন্যান্য দিনের চেয়ে আজকে কেমন জানি অন্য রকম অন্য রকম লাগছিলো।আমরা মিষ্টি খেলাম আর সবুজ ভাইয়ের জন্য রেখে দিলাম। ও খুব হাসি ঠাট্টা করতো তাই হাসতে হাসতে সবাইকে বল্লো-“আমার বিয়ে মিষ্টি তো তাই এতো টেস্ট। ” আমরা সবাই হো হো করে হেসে উঠলাম। তারপর আমারা যে যে যার যার রুমে চলে গেলাম।
রাত্রি দশটা বেজে গেছে।
আমার আর হাসনের খাওয়া এখনো হয়নি। বাইরে থেকে ঘুরে এসে খাবো। প্রতিদিনকার রুটিন এটা আমাদের।
সবুজ ভাই এখনো মেসে আসেন নি। ওর অফিসে (মানে যে কোচিংয়ে হাসান ক্লাস নিতো সবুজ ভাই ও সেখানেই কাজ করতো।) অনেক কাজ ছিলো তাই হয়তো বা দেরি হচ্ছে। তাই সবুজ ভাইকে ফোন দিয়ে সুখবরটা জানালাম। কিন্তু সবুজ ভাই বল্লো যে সে বাসা থেকে এধরনের কোন খবরই পাই নাই। তবে তার কথায় আমি আর কর্নপাত করলাম না।
সোয় ১০টা বাজে। হাসান আমাকে প্রতিদিনকার মতো বল্ল -
-চলো একটু ঘুরে আসি।
-চলো।
দুজনেই বাইরে হাটছি। গোরস্থানের পাশদিয়ে। হাল্কা হাল্কা চাঁদের আলো আছে। মানুষ যাচ্ছে বোঝা যাচ্ছে কিন্তু চেহারা চেনা যাচ্ছে না। আমার আর হাসানের সখ ছিলো গোর স্থানের ভুত দেখা। তো ঐ দিন হাসান বল্লো
-চলো আজ ট্রাই করি??
-কি??
-ভুত...!!!
-চলো যাই......।
-চলো ভেতরে যাই। চলো।
আমারে দুজনের হাতে ছিলো চানাচুরেরন প্যাকেট।দুজনে গোরস্থানে ঢুকে পড়লাম। আর হাসানকে অন্য দিনের থেকে আলাদা আলাদা লাগছিলো।
যখন হাসছিলো তখন কেমন জানি রহস্য জনক ভাবে হাসছিলো।
এর ভেতরে সবুজ ভাই মেসে চলে এসেছে। সে মেসে ঢুকেই -
-মাফুজ.............মাফুজ.............।
-জ্বি ভাইয়া??
-আমাার ভাস্তে আসছে বলে???
-জ্বি।
-কোথায়???
-বাইরে রাহুল আর হাসান ভাই।
-ওহ্ আচ্ছা।
এর ভেতর আমি আর হাসান গোরস্থানের ভেতরে অনেক খানি চলে এসেছি। হাটছি , চানাচুর খাচিছ , আর কথা বলছি। হাসানÑ
-আজ কিছু একটা দেখাবোই তোমকে......
-কি আর দেখাবে??
-প্রতি দিন ই তো দেখাও......
-রিয়্যেলি আজ দেখাবো।
-ওকে বস।
দ্রুত হেটে চলেছে হাসান। যেন কিছু একটা খুজে বেড়াচ্ছে সে। যেন আস্তে আস্তে হাটলে সে সেটা হারিয়ে ফেলবে। একটু দুরে হাসান । আমি পেছনে। আস্তেই হাসান গোরস্থানের ভেতরের দিকে চলেছে সে। অথচ অন্য দিন ঐ দিকে সে যায় না।
এমন সময় চৌকিদারের ডাকÑ
-কে...??কে ......ঐ দিওক??
-মামা !! আমরা।
-আমারা কে???
-রাহুল আর হাসান।
-ওহ্ আচ্ছা।
মাঝে মাঝে যেতাম গোরস্থানের ভেতরে তাই তার সাথে আমাদের পরিচয় অনেক আগের থেকেই।
সেই বড় একটা লাইট। হাতে একটা বাসি । যেটা দিয়ে মাঝে মাঝে হুইসেল দিচ্ছে।কড়া কড়া গোঁফ। হাতে লাঠি নিয়ে এগিয়ে আসলো চোকিদার মামা।
আমার হাতে সচানাচুর ছিলো যেটা আমার দু হাত দিয়ে পেছনে ধরে রেখেছি। ভাবছি মামাকে দেবো । তখনই মামা বল্লো-
-কিছু কি মিললো??? মামা???
-নাহ্ মামা। এ জীবনে আর বোধ হয় ভুত দেখা হবে না।
-দেখ কি হয়....!!!
এমন সময় আমার মোবাইলে কল বেজে উঠলো। দেখি সবুজ ভাইয়ের কল.......
-হ্যালো ভাই।
-হ্যা ,........কোথায়???
-গোরস্থানের ভেতরে।
-ওখানে কি??
-ভুত দেখছি..........।
-তাড়াতাড়ি মেসে আসো।
-থামেন হাসান আসুক আগে তারপর।
-হাসানকে কোথায় পেলে??
-ও তো বিকেলে মেসে এসেছে।
-তুমি কি জানো হাসান মারা গেছে????
-ধুরর কি যে বলেন।একটু আগেও আমার সাথে হাসান ছিলো। ও মরবে কোথা থেকে??
-ও আজ বিকেলে ওর ঘরে ঢুকে আর বের হয়নি। অবশেষে রাত্রি দশটার দিকে ওর ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ওর লাশ বের করা হয়েছে। [ফোন আসার সাথে সাথে চোকিদার মামা বাসিতে হুইসেল দিতে দিতে চলে গেছেন।]
-তাহলে আমার সাথে এতক্ষণ কে ছিলো ????
-দ্রুত ওখান থেকে চলে এসো।যা হয়েছে হোক। হাসানদের বাসায় যেতে হবে।
আমি আর ওখান থেকে নড়তে পারছি না। মনে হচ্ছিলো আমার পা দুইটা পাথর হয়ে গেছে। চার পাশে তাকিয়ে দেখি কেউ নেই। পেছন থেকে হাতে খেয়াল করলাম আমার হাতে কিছু নেই। তারপর আমার আর কিছু মনে নেই । আমার সাথে কি হয়েছে। পরের দিন বিকেলে হাসপাতালের বিছানায় নিজেকে আবিষ্কার করলাম।
পরে জানতে পেরেছি ঐ দিন গোরস্থানের ভেতর আমি ছাড়া আর কেউ ছিলো না। আর ঐ দিন গোরস্থানে কোন চোকিদার বা পাহারাদার কিছুই ছিলো না। আমার আসতে দেরি দেখে মেসের বড় ভাইয়েরা আমাকে গোরস্থানের ভেতর ক্ষত বিক্ষত অবস্থায় অজ্ঞান উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। তারপর তারা হাসানের বাসাতে যায়।ভোরে হাসানকে কবর দেয়া হয়। তারপর দুপুরেই সবাই কুষ্টিয়া চলে আসে আর আমার জ্ঞান ফেরার জন্য অপেক্ষা করে। আমার বাসাতে খবর দেয়ার পর আমার বাবাÑমা এসেছিলো। পরে ডাক্তার বলেছিলেন যে ক্ষতটা হয়েছিলো দৌড়ে পালাতে গিয়ে পড়ে গিয়ে হয়েছিলো।
আশ্চর্য জনক ব্যাপার হলো আমাকে তারা উদ্ধার করে একটা নতুন কবরের পাশে থেকে। আর সেটি ছিলো একটি ছেলের কবর এবং সেটিও ছিলো আত্মহত্যা কেস।
পরে মাঝে মাঝেই স্বপ্নে হাসানকে দেখতাম। সেই হাসি হাসি মুখ।সেই চঞ্চল হাসান।
তবে আজও আমার অজানা ঐ দিনকার হাসান কে ছিলো। আর মেসের সবার কাছেও রহস্য হয়ে থেকে গেছিলো ঐ মিষ্টির ব্যাপারটা। ঐ দিন কি খেয়ে ছিলাম মিষ্টি নাকি অন্য কিছু??
পরে গোরস্থানের মসজিদের ইমাম সাহেবের কাছে সবকিছু বলে তাবিজ করে নিয়েছিলাম।
আর আশ্চর্য ব্যাপার হলো সবুজ ভাইয়ের জন্য রাখা হাসানের মিষ্টি একটি বিড়াল খেয়ে ফেলেছিলো যখন সবুজ ভাই আমাকে হাসানের মৃত্যুর সংবাদ দেন তখন।
হাসানের মৃত্যুর তিন চার দিন পর তার বাবা এসে তার সব কিছু নিয়ে যান।
প্রায় বছর খানেক হয়েছে হাসানের মৃত্যুর। আজও আমার মোবাইলে হাসানের ছবিটা দেখলে গা শিউরে ওঠে। মনে পড়ে ঐ দিনকার রাত্রের কথা। ঐ ঘটনা ঘটার মাস খানেকের ভেতরেই আমারা ঐ মেস ছেড়ে দিয়েছিলাম................
ঝলসানো এক টুকরো স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে থাকাটা আসলেই একটা আশ্চর্য ব্যাপার। এক ঝাঁক ডানাকাটা ঝলসানো স্বপ্ন নিয়ে আকাশের নিচে বসে থাকাটাই উত্তম আর বার বার আকাশের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলা ইশ্ যদি উড়তে পারতাম। কিন্তু সেটা যে কখনোই সম্ভব নয় সেটা সারা জীবনই ধ্রুব..........।

নিষ্ঠুর রাতটা তার নিষ্ঠুরতা নিয়ে গভীর হয়ে চলেছে। চন্দ্রটাও ক্রমে ক্রমে আলোর বাধ ভেঙে দিয়েছে। আর আমি আমার অজানা এক স্তব্ধতা নিয়ে রাত্রিকে প্রহরে পরিনত করছি কোন এক আবেগের বেড়া জাল বুনে..... জীবন নামের মরীচিকার পেছনে ছুটতে ছুটতে।

the nights are wet.
my memories ...wet
our words..wet
my wet eyes are still damp

পৃথিবী আজ শুনে রাখো তোমরা
সুখের ছোয়ায় ভরে আছে হৃদয়ের বসুন্ধরা
যাহার লাগি আজ এই মনটা পাগলপারা
সে যে আর কেউ নয় আমার মন পায়রা |

১৪ ফেব্রুয়ারির জন্মদিন।

আজ ২০শে ফেব্রুয়ারি । আমার মনটা অনেকটাই খারাপ আজ ।
আমার রুমমেট সুমন। খুব ভালো ছেলে ।খুব ইমোশনাল। সুমন ইবি তে C.S.E. তে পড়ে থার্ড ইয়ারে।আমরা গোরস্থানে পিাড়াতে থাকি। এখন রাত্রি ১টা বাজে। লিখতে বসলাম। সুমন শুয়ে আছে। সে সন্ধ্যা থেকে অনেক কেঁদেছে। সকাল থেকে খাওয়া দাওয়া করে নাই। অনেক বলার পরেও খাওয়া দাওয়া করাতে পারিনাই।
আর..........। ও...হ্যাঁ...। আমি রাসেল। আমি ইবি তে ম্যাথ এ মাস্টার্স এ পড়ছি।
আমি সুমনের সাথে মাত্র এক মাস আছি। আমার মেসে থাকি ২০০৮ সাল থেকে। আমার মেস লাইফে সুমনের মত ছেলে পাই নাই। নম্র ভদ্র একটা ছেলে।
কিন্তু রহস্যময় একটা ছেলে। মাঝে মাঝে মনে হয় অনেক কষ্টে আছে। আবার মাঝে মাঝে মনে হয় সব থেকে খুশি একটা ছেলে।
সুমন পরি নামের একজন মেয়েকে ভালোবাসতো। কিন্তু মেয়েটি সুমনকে পাত্তা দিতো না। তবে পরী বুঝতো সুমন তাকে কতটা ভালোবাসে। স্কুলে পরী আর সুমন একই সাথে পড়তো। এখন সুমন এখন ই.বি. তে পড়ে আর পরী সরকারী কলেওজে পড়ে।
সুমন একটা কোচিং সেন্টারে একটা পার্টটাইম জব করকো। গত ফেব্রুয়ারিতে সে তার প্রথম বেতন পেয়েছে।জীবনের প্রথম উপার্জনে সে তো মহা খুশি।
আমাকে বল্লো
-রাসেল ভাই......
-হ্যা...বলো।
-কি করা যায় বলেন তো.....?
-কিসে কি করা যায??
-প্রথম বেতন পেলাম। মেসে তো মিষ্টি খাওয়ালাম।আর............
-আর..........। আর কি?
-যদি গার্লফ্রেন্ড থাকতো.....................
-রাইট...। তোমার পরী আছে না।....। ওকে একটা গিফট দাও........।
-ধ্যাৎ কি যে বলেন না ভাই......?? ও তো আমার সাথে কথাই বলতে চায় না আর গিপট নেবে??
-নেবে নেবে । দিয়েআ দেখো না..........।মেয়েরা গিফট পেলে খুশি হয়............।
-ও ঐ রকম না । আর কি ভাবে দেবো??
-তুমি ওর সাথে দেখা করো।
-দেখা করতে চাবে না।
-করবে করবে । দেখা করবে অবশ্যই ।আর আগে থেকে কেছু বইলো না। দেখা করতে গিয়ে দিয়ে দেবে।
-ওকে। পরীকে একটা গিফট দেবো। আর কিছু টাকা মাকে দেবো। কেমন হবে??
-খুব ভালো হবে। দারুন হবে দারুন।
এই সমস্ত ছোট খাটো ব্যাপারে সুমন আমার সাথে আলোচনা করতো। মেয়েটিকে সুমন ফোন করলে সে ফোন রিসিভ করতো না। ফেসবুকে নাকি মাঝে মাঝে চ্যাট করতো।
১২ ফেব্রুয়ারি বিকেলে যখন রুমে আসলাম তখন সুমনকে খুব হাসি খুশি দেখলাম। তো ওকে খুশি দেখে ভালোই লাগলো।ওকে জিজ্ঞেস করেই ফেল্লাম
-কি সুমন সাহেব। এত খুশি খুশি লাগছে যে?
-জ্বী ভাই একটু একটু।
-কাহিনীটা কি??
-পরী দেখা করতে চেয়েছে।
-কবে>??
-সেটা বলে নাই।
-তবে???
-ও বলেছে ১৫ থেকে ২০ তারিখের ভেতরে দেখা করতে চেয়েছে।
-এটা আবার কেমন? তুমি বল্লে না যে ১৪ তারিখে দেখা করতে হবে।
- কি যে বলেন না?? এমনিতেই দেখা করতে চায় না আবার ১৪ তারিখে??
-তাও.... তো বলতে পারতে.....।। যাই হোক কি বল্লো?? যখন দেখা করতে চাইলে তুমি??
-ও বল্লো ১৫ থেকে ২০ তারিখের ভেতরে আমি বাসায যাবো । আর যেদিন বাসায় যাবো সেদিন তোমার সাথে দেখা করবো।আচ্ছা ওকে কি দেয়া যায় বলুন তো?
-একটা সুন্দর ডায়েরি আর একটা কলম দিয়ে দাও। আর বেশি কিছু দেয়ার দরকার নাই।
-আচ্ছা আগামী কাল বিকেলে আমি আর আপনি গিয়ে কিনে আনবো।
-ওকে।
১৩ তারিকে আমি আর সুমন ইসলামিয়া কলেজ মার্কেট থেকে সুন্দর একটা ডায়েরি আর একটা কিনে আনলাম পরীর জন্য।সুমনের বাসা থেকে ওর বাবা প্রতিদিন বাড়ি যেতে বলে কিন্তু ও শেুধু আসবো আসবো করে।শুধু পরীর সাথে দেখা করার জন্য যায় না।প্রতিদিন ওকে জিজ্ঞেস করতাম কবে সে দেখা করবে??
১৪ তারিখ চলে গেলো।
সুমন ফোন দিলে রিসিভ করে না পরী।ফেসবুকে মেসেজ এর উত্তরও দেয় না। তবুও সুমন পরীর জন্য অপেক্ষা করে।যে একবার না একবার পরী তার সাথে দেখা করতে চাইবে।তাকে বলবে “সুমন, কালকে আমি বাসায় যাবো। আর কাল তোমার সাথে দেখা করবো।”
কিন্তু এক এক করে ১৫ তারিখ যায়। ১৬ তারিখ যায়।১৭,১৮,১৯তারিখ চলে গেলো। আজও সারাদিন সুমন পরীর মেসেজ এর জন্য অপেক্ষা করতো।এ কয়টা দিন ছেলেটাকে খুব উৎফুল্ল দেখাচ্ছিলো।সেই ছেলেটিকে এখন নির্জীব দেখাচ্ছে। ওর মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না।কেঁদে কেঁদে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে।হয়তো এখনো ঘুমায়নি।অন্য দিন হলে আমার সাথে কথা বলতো। আমি কি করছি জিজ্ঞেস করতো।
সন্ধ্যায় রুমে এসে দেখি ও রুমে নেই।ফোন বন্ধ।ওর পছন্দের জায়গা ছিলো আমাদের মেসের ছাদ।মন খারাপ থাকলে একা একাই ছাদে গিয়ে বসে থাকতো।আমাদের মেসের ছাদের উপর থেকে পরীদের মেস দেখা যেত হালকাস হালকা। ঐ দিকে তাকিয়ে থাকতো সুমন।ভাবলাম ছাদে আছে সুমন। ছাদে গিয়ে দেখি ছাদের এক কোণে আগুন জ্বলছে। আর বসে বসে কাঁদছে। বুঝলাম আগুনের সাথে তার দুঃখ গুলোকে ছাইয়ে পরিনত করছে। কাগজ গুলো ভালোই পুড়ছে আগুনে।
দূর থেকেই চলে এলাম।
কাঁদুক ছেলেটা।
এতে কিছুটা হলেও হাল্কা হবে।
তাই তাকে আর থামালাম না বা স্বান্তনা দেয়ার ব্যার্থ চেষ্টা করলাম না।
এখন শুয়ে আছে সুমন ............।
আর আমি লিখছি।........
বুঝি যে মেয়েটা আসবে না ওর জীবনে। তবুও ওকে বলি একদিন ও তোমাকে বুঝবে। একদিন ও আসবেই....................।
সস্তা এই গল্পটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এটা বেশিরভাগই........ বাস্তব..........আর কিছুটা কাল্পনিক।
ধন্যবাদ।
গোধুলির বেলায়
মোঃরুহুল আমিন
[][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][]
দেখেছিলাম ঐ গোধুলির বেলায়
নেমেছিলো চাঁদ পথের ধুলায়
ভরেছিলো পথ তাই পূর্ণিমায়
উঠেছিলো চাঁদ তখন দিনের আলোয়।


সাদাকালো দিন হলো রঙিন
বেদনার কালো আজ হয়েছে মলিন
প্রাণ হীন দেহে যেন ফিরে এলো প্রাণ
মনে মনে বাজে তাই তাহারই গান।

সবই যে আজ ভালো লাগে যেদিকে তাকাই
জানি না কি যাদু করেছে চাঁদটা আমায়
তাইতো তাকে নিয়ে গান গেয়ে যায়
হৃদয় আকাশে তাকে দিয়ে ঠাই।
বাবা তুমি
মোঃরুহুল আমিন
===========================================
যা চেয়েছি তাই দিয়েছো-
আলাদিনের প্রদীপ তুমি আমার।
প্রতিদানের কথা ভুলেছো
যা দিয়েছো আমায় তুমি তার।


বাবা,তুলনা হয় না তোমার
তুমি যে সবার সেরা।
আমায় নিয়ে স্বপ্ন হাজার
তোমার দুচোখ ভরা।

বাবা, আদর্শ তুমি আমার
রেখো পায়ের নিচে আমায়।
তোমায় কষ্ট দেয়ার আগেই যেন
এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাই।

বাবা,চলে যেও না দূরে কোথাও
রেখে অপরিচিত পৃথিবীর বুকে
তোমায় ছাড়া কি করে থাকবো?
মরবো যে আমি ধুকে ধুকে।

ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাক্টঃ

১।তামাম দুনিয়ার ব্যাবাক সাবজেক্ট সোজা খালি ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্ট বাদ দিয়া।
২।একমাত্র ইঞ্জিনিয়ারদের পক্ষেই সম্ভব সকাল ৭:৫৫তে উইঠ্যা সকাল ৮ টার ক্লাশ করা।
৩।জিন্সের প্যান্ট আর টি শার্ট হইতাছে ইঞ্জিনিয়ারদের জাতীয় পোশাক।...
৪।সাধারন মানুষ ভাঙ্গা জিনিস জোড়া দেয়, আর ইঞ্জিনিয়াররা আগে জিনিসটা ভালোভাবে   ভাঙ্গে তারপর জোড়া লাগায়।
৫।ইঞ্জিনিয়াররা তৈরি করতে পারে না এমন কিছুই নাই,তারা খালি একটা মাইয়্যার সাথে রিলেশন করতে পারে না এইযা।
৬।দুনিয়ার কোন কিছুর দাম বাড়লেও আমাদের মাথা ব্যাথা নাই। খালি সিগারেটের দাম ৫ টাকা থেকে ৬ টাকা হলেই আমাদের মাথায় আগুন ধরে যায়।(আমার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়)
৭।আমরা সমাধান করতে ভালোবাসি, যেখানে কোন সমস্যা নাই ওখানেও আমরা সমস্যা  তৈরি করে তারপর সমাধান করি।
৮।যে কোন ইকুয়েশন ডেরাইভ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব।খালি আমাদের কি প্রমান করতে হবে সেই ইকুয়েশন একবার লেইখ্যা দেন।
৯।তুমি কি কপার(CU) আর টেলুরিয়াম(TE)দিয়া তৈরি। কারন তুমি কিউট(CUTE)।এভাবেই ইঞ্জিনিয়াররা ফ্লার্ট করে।
১০।আমাদের জীবনের ভয়ংকর দুস্বপ্ন হল টিচার ক্লাশ নিতাছেন কিন্তু এটেন্ডেন্স দিতাছেন না !
১১।আমদের পরীক্ষার আগে একটা রাত টাইম দাও আমরা তোমাকে সিলেবাস শেষ করে দেব।
১২।একজন ইঞ্জিনিয়ারই জানে যে আরেকজন ইঞ্জিনিয়ার কি বা*ডা জানে। কিন্তু সাধারন মানুষ আমাদের জ্ঞানের ঢেকি ভাবে।
১৩।আমরা রাতের বেলা ঘুমাই না আর ভোরবেলা উঠিনা। আমরা ভোরে ঘুমাই আর সন্ধ্যার দিকে উঠি।
১৪|আমরা আমাদের বাপ মায়ের কাছে ধোয়া তুলসি পাতা। ভাজা মাছটাও উল্টায়া খাইতে পারি না।ওমা ওটা উল্টায়া খাওয়া যায়।
১৫|আমাদের সাথে ঝগড়া করা আর গালে বসা মশা মারা একই কথা। কারন মশা মরুক আর না মরুক নিজের গালে থাপ্পর মারতে হবেই।
১৬|প্রত্যেক নতুন Semester আসলে সবার মুখে একটাই হতাশা, এই বছর ও কোন
সুন্দর মাইয়্যা ভর্তি হলো না রে পাগলা।
১৭|একটা মাতাল ইঞ্জিনিয়ার যত ভালো ইংলিশ বলতে পারে, আমেরিকানরাও অত ভালো ইংলিশবলতে পারে কিনা সন্দেহ।
১৮| প্রত্যেক Semester এর শেষে " এই Semesterটা টেনে টুনে পাস করে যাই
নেক্সট Semester এ দেখাই দিব আমি কি জিনিস..!"কিন্তু আর দেখানো হয় না কিছুই।

কিছু কি ভূল বললাম??

Thursday 5 February 2015

ভালোবেসো ঐ পারে

ভালোবেসো ঐ পারে
মোঃরুহুল আমিন
========================
ও আমার ভালোবাসার বন্ধুরে-
ভালোবেসো একটু এই আমারে
আমার মরনের পরে।
ভাবছো তুমি এই আমারে,
পাবে কোন ধরণী পরে
আমার মরণের পরে।
যদি জমে এক বিন্দু মোর তরে,
তোমার ঐ সুন্দও হৃদয় মাঝারে,
যেও ঐ উঠানে গভীর রাতরে,
দেখবে ঐ আকাশে জ্বল জ্বল করে,
জ্বলছি আমি তোমার ভালোবাসার তরে।
ভালোবাসো আর না বাসো তুমি আমারে
আশা করি পাবো আমি তোমারে,
আমার আপন করে ঐ পরপারে।

সুখ দুঃখের কাব্য

:::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
====================
:::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
সুখ দুঃখের কাব্য
রুহুল আমিন
[][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][]
জানি, থামবে না তোমার মন এই মনের বাঁকে
বেদনার আগুন জ্বলছে এই বুকে
প্রিয়া, থাকো একা থাকো তুমি সুখে
একা একাই মরবো আমি ধুকে ধুকে

চাইবো না ভাগ তোমার সুখের
বলবো না কখনো ভাগ নাও এই দুখের
তুমি ছিলে আছো থাকবে হৃদয়ে আমার
দুঃখটাই হবে স্মৃতি এই হারানো প্রেমের

চাইবো না ভালোবাসা আসবো না আর
স্পন্দন তুমি এই বিক্ষত বুকের
জেনে রেখো তুমি পৃথিবী আমার
একটাই কাব্য তুমি এই ছেড়া বুকের পাতার।

 সে পর

==========================
[][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][]
:::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
 [][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][]
 ==========================
সে পর
মোঃরুহুল আমিন
---------------------------------------------
গত রাতে স্বপ্নে দেখেছি হয়েছে যে সে পর
নেই কোন অধিকার তাহার উপর আর
বোঝেনি কখনো আমায় সে,বোঝেনি অন্তর
তাইতো আজ তার জন্য জীবন হয়েছে মন্থর

তাকে না পেয়ে যদি ছাড়তে হয় এই সংসার
পরের জনমে খোদা করো গো তাকে আমার
নয়তো পৃখিবীতে ফিরে আসবো আবার
শত জনমের সাধনা যে সে আমার

স্বপ্নের মতই হারাবো তাকে একদিন
পাবো না পাথরে গড়া তার ঐ মন
কি করে দেখবো,পর হবে তার আপন
তাই বলি হে খেদা কেড়ে নাও এই জীবন।
*****************************
:::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
*****************************

প্রেমের দীপক

প্রেমের দীপক
মোঃরুহুল আমিন
-------------------------------------
তুমি লাইলি মজনু আর শিরি ফরহাদের প্রেম-
ফাল্গুনী পূর্ণিমা আর সেই ভালোলাগার গান।
তুমি প্রিয়ার সাথে স্বপ্নের ভালোলাগার ঘুম,
পায়রা, তুমি আমার বনলতা সেন।

তুমি মমতাজ আর শাহ্জাহানের তজমহল-
সকালের পাখি,সোনা ঝরা সোনালী রোদ-
তুমি আমার ছিলে আছো থাকবে চিরকাল,
পায়রা,তুমি আমার আকাশে ফাগুণী পূর্ণিমা চাঁদ।

তুমি অঞ্জনা ললনা তুমিই প্রেমের প্রতীক
আধ ফোটা গোলাপ আর মুক্তঝরা শিশির
তুমি আমার প্রেমের দীপক
পায়রা, তুমিই শুধু ভালোবাসা আমার।

আজব মেশিন 

আজব মেশিন
 মোঃরুহুল আমিন
----------------------------------
পাঁচটি অঙ্গের আজব মেশিন
গড়েছো যে তুমি শাঁই
সেই মেশিনে খেলছো খেলা
তাহার হদিস কোথায় পাই

ছোট্ট একটা দম দিয়া
ছাড়ছো মেশিন ভবো পার
দমের তত্ত্ব জানবে কে শাঁই
এত বড় সাধ্য বা কার?

ইচ্ছা মত খেলছো খেলা
মেশিন দমের কারবারি
এই জগত যে তুমি হিনা
লবণ ছাড়া তরকারি

এক সেকেন্ডও বিশ্রাম নাই
নাই যে তোমার তাড়াতাড়ি
এই মেশিনটার দম ফুরালেই
ফিরবে দয়াল তোমার বাড়ি।

অভিমানী মন

====================================

অভিমানী মন
মোঃরুহুল আমিন
-------------------------------------
আমি বৈশাখী ঝড়ো হাওয়া-
তীরে আছড়ে পড়া উত্তাল ঢেউ!
এখন আামি প্রেমের কাঙ্গাল
ব্যাথা বোঝার মত নাই যে কেউ।

বিচুভিয়াসের লাভা আমি,
আগ্নেয় গিরির মহা বিস্ফোরন।
বুুকের ভিতর ছাই যে সবই
পুড়ে গেছে এই অশান্ত মন।

চৈত্রের কড়া রোদ আজ এই মনে
পুড়ে গেছে হৃদয়ের ভূমি
এক বুক ভালোবাসা তোমার তরে
কখনো বোঝনি আমায় তুমি।

চৈত্রের রৌদ থামবে একদিন
থামবে উত্তাল ঢেউ
পৃথিবী ছেড়ে চলে যাব
খুঁজে পাবে না আমায় কেউ।

একা

প্রেমের বসন্ত

=========

 


গোধুলির বেলায়
===========
গোধুলির বেলায়
মোঃরুহুল আমিন
[][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][]
দেখেছিলাম ঐ গোধুলির বেলায়
নেমেছিলো চাঁদ পথের ধুলায়
ভরেছিলো পথ তাই পূর্ণিমায়
উঠেছিলো চাঁদ তখন দিনের আলোয়।

সাদাকালো দিন হলো রঙিন
বেদনার কালো আজ হয়েছে মলিন
প্রাণ হীন দেহে যেন ফিরে এলো প্রাণ
মনে মনে বাজে তাই তাহারই গান।

সবই যে আজ ভালো লাগে যেদিকে তাকাই
জানি না কি যাদু করেছে চাঁদটা আমায়
তাইতো তাকে নিয়ে গান গেয়ে যায়
হৃদয় আকাশে তাকে দিয়ে ঠাই।
প্রেমের মাতাল
---------------
প্রেমের মাতাল
মোঃরুহুল আমিন
[][][][][][][][][][][][][][][][][][][][][]
প্রেমের নেশায় মাতাল আমি
তাই পৃথিবী জেনেছে সে কথা
আমার ভালোবাসা শুধু তুমি
তোমার মাঝেই সব পূর্ণতা।

মাতলামি ঢেকে রাখা যায় না
ঢেকে রাখা যায় না প্রেমের পাগলামি
তাইতো তারায় তারায় রটে গেছে
প্রেমের নেশায় মাতাল আমি।

যখন চোখ রাখি মনের আয়নায়
দেখি তোমার ঐ মুখ
মাতলামি তখন আরো বেড়ে যায়
সুখের ছোয়ায় ভরে যায় বুক।
*************************
গল্পের অদৃশ্য মেয়ে
----------------------

গল্পের অদৃশ্য মেয়ে
মোঃরুহুল আমিন
--------------------------------
কিছু দৃশ্য আর কিছু অদৃশ্য
কিছু স্বপ্ন আর কিছু কল্পনা দিয়ে
জীবন আমার এক বাস্তব গল্প
যে গল্প সাঁজিয়েছি শুধু তাকে নিয়ে।

বাস্তব দৃশ্যে আমি মানুষ
বেঁচে আছি অনেক স্বপ্ন নিয়ে
এই বাস্তব গল্পে চলে আসে সেই
গল্পের অদৃশ্য মেয়ে ।

যখন বিভোর থাকি ঘুমের ঘোরে
নিরবে আসে সে স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে
গোপনে বসত করে এই অন্তরে
সেই গল্পের অদৃশ্য মেয়ে।


আমার এই রাস্তব গল্পে আসল চরিত্র সে
গল্পের যত কথা গান কবিতা তাকে নিয়ে
সে যদিও নেই আমার বাস্তব জীবনে
তাই তো সে গল্পের অদৃশ্য মেয়ে।