Monday 13 July 2015

নুসরাতের গল্প

গতকাল নুসরাত এর সাথে অনেকক্ষণ ছিলাম। ওরা আজ বাসায় চলে যাবে। তাই গতকাল বিদায় জানানোর জন্যই দেখা করতে যাওয়া।ওর বাবা ইঞ্জিনিয়ার। কুষ্টিয়াতে থাকেন। বি.আর.বি. তে জব করেন নুসরাতের বাবা। ওদের বাসা সিরাজগঞ্জ। ঈদের পরে আসবে। অনেকদিন দেখা হবে না ওর সাথে।তাই বিকেলে দেখা করার কথা বললো। তাই গেছিলাম দেখা করার জন্য।
সরকারী কলেজের সামনে ও আমার জন্য অপেক্ষা করছিলো। দেখা করতে গিয়ে কখনো আমি ওর থেকে আগে যেতে পারিনাই। বরাবরের মতো অজও একই অবস্থা।
তবে মেয়েটার ভেতর কোন রকম প্রতিক্রিয়া দেখিনাই কখনো দেরি করে দেখা করতে যাওয়ার জন্য। আবার দেরি করার জন্য সরি বললে রাগ করে।
গিয়ে পুকুর পাড়ে বসলাম অনেকক্ষণ। কি জানি মেয়েটার মাথায় কোন গন্ডগোল আছে দেখা করতে আসলে আর বাসায় ফিরে যেতেই চায় না।
যাই হোক আজ ওর সাথে প্রথমদিন দেখা করার কথা বলি আজ। আমি ক্যাম্পাস থেকে ফিরছিলাম। হাসপাতাল মোড় পার হয়েছি। দেখি পেছন থেকে একটি মেয়ে ডাকছে।
-ভাইয়া.........একটু শুনুন..........।
আমাকে কোন মেয়ে ডাকবে কেন??? হয়তো বা অন্য কাওকে ডাকছে।আমি তাতে কান না দিয়ে চললাম। তারপর দেখি আমার নাম ধরে ডাকছে।
-নরিব ভাইয়া..............।
আমি পিছু তাকালাম...
-আমাকে বলছেন??
-জ্বী......কখন থেকে আপনার পিছু নিয়েছি বলুন তো...??
আমি আসলেই হতবাক। এতদিন জানতাম ছেলেরা মেয়েদের পেছনে ঘোরাঘুরি করে । আর আজ এ কি শুনলাম রে বাবা???
-আমি আবার কি করলাম বলুন তো?
-অনেক কিছু......করেছেন। বলেই একটা দুষ্টামির হাসি দিল....।আপনি কি  বিজি??
- না...... কেন বলুন তো?
-একটু কোথও গিয়ে বসি চলুন।
আমি একটা শক খেয়ে গেলাম। সঙ্গে গিয়ে কেস খেয়ে যাবো নাকি আবার??
-কোথায়??
-চলুন কোথাও গিয়ে বসি??
-কোথায়??
-এই যে শিশু পার্ক।
-আমাকে দেখে কি শিশু মনে হয়?
-কেন?
-না..........মানে শিশু পার্কের কথা শুনলে কেমন কেমন মনে হয় তো তাই।
তারপর ওকে বল্লাম একটু দাড়ান একটা ফোন করে নেই। এদিকে আড়ালে এসে রনি ভাইকে ফোন দিয়ে বল্লাম
-ভাই.....
-হ্যা নিরব বলো............।
-কোথায় আপনি?
-কেন কোন সমস্যা???
-না .......। মানে ......একটু পার্কে ঢুকবো কোন সমস্যা হবে??
-না কোন সমস্যা নাই। ঢুকে পড়ো।
-একটা মেয়ে আছে সাথে??
-নো প্রব্লেম।গার্ল ফ্রেন্ড??
-না ভাই কি যে বলেন?? আমার সব কথাই তো আপনি জানেন।
-ওকে নো প্রব্লেম। যাও কোন সমস্যা নেই। আর পার্কের ম্যানেজার তো তোমাকে চেনে। আর আমি ফোন করে দিচ্ছি। ও সব ঠিক করে দেবে।আর কোন সমস্যা হলে আমাকে ফোন দিও।
-ওকে।
[রনি ভাই হলো এই এলাকার বড় ভাই। তার সাথে অনেক ভালো একটা সম্পর্ক আমার। উনি আমাদের মেস মালিকের ছেলে রাসেল ভাই এর বন্ধু। রাসেল ভাইয়ের মাধ্যমেই আমার পরিচয় তার সাথে।সে আবার অনেক কথা। সেটা আরেকদিন বলবো।]
এবার নুসরােেতর কাছে আসলাম।
-চলুন....।যাওয়া যাক।
-চলুন।.....[কিছুক্ষণ নিরবে হাটলাম। পোস্ট অফিসের সামনে এস ] আচ্ছা আপনি এত ভিতু কেন??
-মানে??
-ফ্রেন্ডদের ফোন করে আসতে বল্লেন ?? যাতে আপনার কোন সমস্যা না হয়??আর ভয় নেই আমি কিডন্যাপার না। যে আপনাকে কিডন্যাপ করবো।এতটুকু বিশ্বাস করতে পারেন।
-আরে না.....। ঐ রকম কোন ব্যাপার না।
-তাহলে কি রকম??
বুঝলাম যে ধরা খেয়ে গেছি। তবে এটা বুঝলাম  মেয়েরা ছেলেদের মন বোঝার একটা অসাধারণ ক্ষমতা রাখে। চুপচাপ।পার্কের ভিতেরে গিয়ে বসলাম।চারে দিকে কপত-কপতি। অনেকটা অস্বস্তি লাগছে। এমন সিচুয়েশনে পড়ি নাই কখনো। নিরিবিলি একটি জায়গায় আমরা বসলাম। এতক্ষণ ওর সাথে পরিচিত মানুষের মতোই কথা হচ্ছিলো।এবার আমি বল্লাম
-আচ্ছা আপিিন কে??
-আমি নুসরাত.....
-আমার পিছু লেগেছেন কেন??
-কেন?? ছেলেদের কি পিছু নেয়া নিষেধ?
-না...........তবে.....
-তবে কি?
-আপনার ভয় লাগছে না??
-না ........তো। ভয় লাগবে কেন??
-আমাকে আপনি চেনেন না। জানেন না। আর আমার সাথে এরকম একটা নির্জন জায়গায়.............??
-আমি এটা বিশ্বাস করি যে একমাত্র পাগল আর কবি দের দ্বারা কোন ক্ষতি হওয়ার আসঙ্কা নেই।
-তারমানে ....আমাকে পাগল বলছেন??
-না..তো.।
-এই যে এখুনি বল্লেন............।আমি উঠি।
-এই দাড়ান দাড়ান।
-জ্বি ....দ্রুত কি বলতে চান বলুন আর.....আমাকে যেতে হবে।আসলে কে আপনি?? যদি কোন ডিটেকটিভ হয়ে থাকেন তবে কেউ যদি আমার নামে কোন তথ্য দিয়ে থাকে তবে তা ভূল।আমি সাধারণ মানুষ।
-আমি বিশ্বাস করি না??
-তবে কি আমাকে আসমি মনে হচ্ছে আপনার??
-আসলে আমি আপনার ফেসবুকের এক বন্ধু। আমাকে হয়তো চিনবেন না।আপনার সব স্ট্যাটাসগুলো আমি পড়ি। আমার খুব ভালো লাগে।আপনার লিখা গল্প,কবিতা আমার খুব ভালো লাগে।
-ধন্যবাদ।
-আপনার ব্লগে প্রতিদিন আমি ঢুকি। িি.িঢ়ড়বস৪ঢ়ৎবস.নষড়মংঢ়ড়ঃ.পড়স।আপনার ব্লগ তো??। খুব দারুন লাগে আমার আপনার লিখা গুলো।
-আমাকে গ্যাস মারছেন?আর হ্যা এটাই আমার ব্লগ।
-ছি ছি. কি যে বলেন না?? সত্যি বলছি।আর একটা কথা বলবো??
-কি বলুন??
-আপনার ফোন নাম্বারটা আমাকে দেবেন??
[আরো একবার ক্র্যাশ খাইলাম এই প্রথম কোন মেয়ে আমার ফোন নাম্বার চাইলো।]
-আচ্ছ নিন........। তাই বলে আমার নম্বারটা ওকে দিলাম।
তারপর অনেকক্ষণ তার সাথে ছিলাম। তবে সে থাকে কোথায় বা কি করে তার কিছুই জিজ্ঞেস করা হয়নাই।পরে মনে পড়লো আমার এই কমন সেন্সটার কথা।আজ এ পর্যন্তই আগামীদিন বাকি অংশ দেয়ার চেষ্টা করবো।

No comments:

Post a Comment